বিরল দর্পণ:
আইসিটির প্রসার ঘটছে দিনাজপুরসহ সারা দেশেই। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বাঁচতে স্বাধীন ভাবে আয়ের পথ খুঁজে অনেকেই আইসিটি নির্ভর ক্যারিয়ার গঠনের চেষ্টা করছেন। কেউবা হচ্ছেন ফ্রিল্যান্সার। আবার অনেকে নিজের দক্ষতায় হচ্ছেন সফলও। এমন উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সামিউল। তিনি ছিলেন ব্রয়লার মুরগী ফার্মের একজন শ্রমিক। এক সময়ের শ্রমিকের কাজ করে কোন মতে চলতো তার জীবন। নিজেরভাগ্য পরিবর্তন করেছেন একটি এন্ড্রয়েড ফোন ও কিস্তিতে নেওয়া ডেক্সটব দিয়ে। ৫ বছরের ব্যাবধানে তার মাসে আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ থেকে আড়াই লক্ষাধিক টাকা।
জীবিকার সন্ধানে পা বাঁড়ান দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার আদরগাঁও (মোল্লাপাড়া) গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদের সন্তান সামিউল ইসলাম। পারিবারিক অভাব ও অনটনকে দুর করতে কখনো করেছেন শ্রমিকের কাজ। তবে অবসরে নিজের এন্ড্রয়েড ফোন চালিয়ে দেখতেন ইন্টারনেটের বিভিন্নকাজ। একপর্যায়ে ২০১৮ সালে পরিবারকে না জানিয়ে চলে যান ঢাকায়। প্রশিক্ষন নেন ফ্রীল্যানসিং সেক্টরের ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স এর। তারপর বাড়িতে আসে নিজেই কাজ শুরু করেন। প্রথম অবস্থায় এ কাজে সীমিত ইনকাম আসলেও হাল না ছেড়ে, স্মার্ট ফোনের পাশাপাশি কিস্তিতে কিনে ফেলেন ল্যাপটপ ও ডেক্সটব। তবে শ্রমিক পেশা ছেড়ে সারাক্ষন ফোন আর ল্যাপটপে কাজ করায় পরিবারের তেমন সায় না পেলেও বছর না ঘুরতেই ব্যাবধানে ভালো উপার্জনের মুখ দেখতে শুরু করে সামিউল। বিভিন্ন দেশ থেকে অনলাইন ভিত্তিক কাজের অফার পেতে থাকেন তিনি। ১০ জনকে সাথে নিয়ে শুরু করেন এসব প্রজেক্ট, এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সামিউলকে। ৬ বছরের ব্যবধানে তার আয় দাঁড়িয়েছে ২ থেকে আড়াই লক্ষাধিক। পাশাপাশি ফেসবুকের আদলে তৈরি করেছেন সামাজিক আন্তযোগাযোগের ওয়েব সাইট। যার ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিশ্বব্যপী ৫০ লক্ষ ছাড়িয়েছে।
কাজের পরিধি বাঁড়াতে সেতাবগঞ্জ পৌরশহরের রেলঘুন্টি নামক এলাকায় ফ্লাট ভাড়া নিয়ে দাঁড় করিয়েছেন নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। যার নাম দিয়েছেন রেজকোড বিডি। সেখানে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন তরুণ। এছাড়া তার প্রতিষ্ঠানের আওতায় দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাজ করছেন শতাধিক ফ্রিল্যান্সার। তাদের মধ্যে অনেকেই মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকার বেশি আয় করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্রিল্যান্সার হলো ‘মুক্ত পেশাজীবী’। বাড়ি কিংবা যে কোনো স্থানে বসেই কাজ করা যেতে পারে। প্রয়োজন প্রবোল ইচ্ছা, নিজের দক্ষতা, বিদ্যুৎ আর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ। ইচ্ছা, ধৈর্য, দৃঢ় মনোবল থাকলে চাকরির পেছনে না ছুটে ফ্রিল্যান্সিং করে যে কেউ সফলতা পেতে পারেন।